আবহাওয়া কাকে বলে ?
কোন স্থানের কোন নির্দিষ্ট সময়ের বায়ুর উষ্ণতা, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতির গড় অবস্থাকে আবহাওয়া বলে।
আবহবিকার কাকে বলে?
আবহাওয়ার দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের বিকারকে আবহবিকার বলে। অর্থাৎ আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের প্রভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একই স্থানে থেকে শিলারাশির ভেঙে যাওয়াকে আবহবিকার বলে।
আবহবিকারকে বিচূর্ণীভবনও বলা হয় কারণ-
যান্ত্রিক বা প্রাকৃতিক এবং বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিলাসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচূর্ণীভবনে মানুষ, উদ্ভিদ, জীবজন্তুও সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে।
আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন এর পার্থক্য
আবহবিকার | ক্ষয়ীভবন |
---|---|
১. আবহবিকারের ফলে ভেঙে যাওয়া শিরার খন্ডগুলি সেই স্থানে থেকে যায়, অপসারিত হয় না। | ক্ষয়ীভবনের ফলে ভেঙে যাওয়া শিলাখন্ডগুলির অপসারণ ঘটে। |
২. শিলাখণ্ডগুলির কোন ভৌত পরিবর্তন হয় না। | শিলাখণ্ডের ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। |
৩. আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান দ্বারা শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। | নদী, হিমবাহ, বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। |
আবহবিকারের শ্রেণীবিভাগ
আবহবিকারকে প্রধানত দু'টি ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন— [ক] যান্ত্রিক বা প্রাকৃতিক আবহবিকার ও [খ] রাসায়নিক আবহবিকার। আবহবিকারকে এই দু'টি প্রক্রিয়ায় ভাগ করা হলেও উভয় প্রক্রিয়াই একসঙ্গে কাজ করে। তবে কোথাও যান্ত্রিক আবহবিকার প্রাধান্য লাভ করে, কোথাও বা রাসায়নিক আবহবিকার প্রাধান্য লাভ করে।
[ক] যান্ত্রিক আবহবিকার
যান্ত্রিক আবহবিকার কাকে বলে?
উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, তুষার, উদ্ভিদ প্রভৃতির প্রভাবে স্বাভাবিকভাবে বা প্রাকৃতিক উপায়ে শিলাসমূহের ভেঙে টুকরো টুকরো হওয়াকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। অর্থাৎ, রাসায়নিক পরিবর্তনহীন আবহবিকারকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলা হয়। এইরূপ আবহবিকারে মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের কোনরূপ পরিবর্তন হয় না।
যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াসমূহ :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়াগুলি হ'ল-
[১] শিলার বোঝা লাঘবজনিত প্রসারণ, [২] শিলার তাপজনিত প্রসারণ, [৩] তুষারের ক্রিয়া, [৪] লবণ আবহবিকার, [৫] কলিকরণ প্রক্রিয়া, [৬] জৈবিক প্রক্রিয়া, [7] অন্যান্য প্রক্রিয়া।
[১] শিলার বোঝা লাঘবজনিত প্রসারণ :
আবহবিকারের ফলে মূল শিলা খণ্ড-বিখণ্ড হওয়ার পর অপসারিত হলে শিলাস্তরের ওপরে চাপ হ্রাস পায়। ফলে নিচের শিলাস্তরগুলো প্রসারিত হয়ে ফাটলের সৃষ্টি করে। এর ফলে ফাটল বরাবর শিলাস্তরগুলো খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায়। গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চলে এইরূপ চাপ হ্রাসের ফলে শল্কমোচন বা এক্সফোলিয়েশন্ জাতীয় পাতের আকারে শিলা ভেঙে যায়। চুনাপাথর, বেলেপাথর প্রভৃতি শিলায় এর প্রভাবে চাঙ্গড়ের আকারে শিলাস্তর ভেঙে যায়। একে চাঙ্গড় ভাঙ্গন (Spalling) বলে।
[২] শিলার তাপজনিত প্রসারণ :
অধিক তাপে শিলার আয়তন প্রসারিত হয়, তাপ হ্রাসে শিলার আয়তন সঙ্কুচিত হয়। ক্রমান্বয়ে প্রসারণ ও সঙ্কোচনের ফলে একসময় শিলাসমূহে পীড়নের সৃষ্টি হয় ও শিলাসমূহ ভেঙে যায়। নানাভাবে এই প্রক্রিয়া ঘটে থাকে-
(i) প্রস্তর চাই বিচ্ছিন্নকরণ (Block Disintegration) : শিলা তাপের কুপরিবাহী। উষ্ণ অঞ্চলে সূর্যতাপে শিলার ওপরের স্তর যতটা উত্তপ্ত হয়, নিচের স্তর ততটা উত্তপ্ত হতে পারে না। এজন্য অসমভাবে সঙ্কোচন ও প্রসারণের ফলে শিলার মধ্যে প্রবল আভ্যন্তরীণ পীড়নের সৃষ্টি হয়। এই পীড়নের মান একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রন করলে শিলার মধ্যে কতগুলি অনুভূমিক ও উল্লম্ব ফাটলের সৃষ্টি হয়। একসময় বিভিন্ন ফাটলের মধ্যবর্তী শিলারাশি চাই-এর আকারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একে প্রস্তর চাই- বিচ্ছিন্নকরণ বলে।
(ii) ক্ষুদ্র কণা বিসরণ (Granular Disin tegration) : যে সব শিলা বিভিন্ন খনিজের সংমিশ্রণে গঠিত (বিষমসত্ত্ব) সেই শিলাগুলি অধিক গরমে বা ঠাণ্ডায় সমানভাবে প্রসারিত বা সঙ্কুচিত হয় না। এর ফলে শিলায় অসমভাবে টানের সৃষ্টি হয়। একসময় বিভিন্ন খনিজের সীমা বরাবর প্রচণ্ড শব্দে শিলাগুলি ফেটে চুরমার হয়ে যায়। এই পদ্ধতিকে ক্ষুদ্র কণা বিসরণ বলে।
(iii) শল্কমোচন (Exfoliation) :
যে সব শিলা একই ধরনের খনিজের সংমিশ্রণে গঠিত (সমসত্ত্ব) সেই শিলাগুলি অসমভাবে প্রসারিত ও সঙ্কুচিত হওয়ার ফলে ওপরের দিকে বেশি। প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে ওপরের স্তরটি পেঁয়াজের খোসার মত খুলে যায়। এইভাবে স্তরে স্তরে শিলার বাইরের অংশ খুলে গেলে শিলার বাইরের আকৃতি গোলাকৃতি হয়ে যায়। এই পদ্ধতিকে শল্কমোচন বা এক্সফোলিয়েশান বা গোলাকৃতি আবহবিকার বলে। গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চলে এইরূপ আবহবিকার বেশি দেখা যায়।
(iv) ময়লার সংস্পর্শে ডাঙন (Dirt Cracking) : শিলার মধ্যে বিভিন্ন ফাটলে ধুলো, বালি, ময়লা সঞ্চিত হয়। অধিক তাপে এই সব ময়লা প্রসারিত হয়ে ফাটলে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে ফাটল বরাবর একসময় শিলা ভেঙে যায়। একে ময়লার সংস্পর্শে ভাঙন বলে।
(v) গণ্ডশিলা বা বোল্ডার ভাঙন (Boulder Cleaving) : অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা। গঠিত শিলার মধ্যে বড় বড় বোল্ডার বা পাথরের খণ্ড অবস্থান করে। এইরূপ শিলা এক অংশে তাপের প্রভাবে প্রসারিত হলেও অপর অংশ ভূমিদ্বারা আবদ্ধ থাকে বলে প্রসারিত হতে পারে না। ফলে একসময় অসমান পীড়নের ফলে শিলার অংশ ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই পদ্ধতিকে বোল্ডার ভাঙন বলে।
(৩) তুষারের ক্রিয়া :
উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে বা শীতল জলবায়ু অঞ্চলে বৃষ্টির জল বা বরফ-গলা জল শিলাস্তরের বিভিন্ন ফাটলের মধ্যে সঞ্চিত হয়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ফাটলে সঞ্চিত ঐ জল জনে বরফে পরিণত হলে শিলাস্তরের ফাটলে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে (জল জমে বরফে পরিণত হলে তা আয়তনে দশগুণ বেড়ে যায়)। ফলে একসময় শিলাস্তর কৌণিক আকৃতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে ভেঙে যায়। পাহাড় বা ঢাল বরাবর ওপর-নিচে সঞ্চিত এইরূপ শিলাখণ্ডকে স্ক্রী বা ট্যালাস বলে। পর্বত বা পাহাড়ের পাদদেশে সঞ্চিত এইরূপ শিলাখণ্ডকে ফেলসেনমার বা ব্লকম্পেড বলে। তুষারের ক্রিয়ার এইরূপ আবহবিকারকে তুষার-খণ্ডীকরণ (Frost Shattering) বলে।
(৪) লবণ আবহবিকার :
শুষ্ক অঞ্চলে ভৌমজলের দ্রাব্য লবণ কৈশিক প্রক্রিয়ায় ওপরে উঠে আসে ও বাষ্পীভূত হয়ে লবণের স্ফটিক গঠন করে। শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে এই লবণের স্ফটিক সঞ্চিত হলে তা প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে। এর ফলে অনেক সময় শিলা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কখনও কখনও লবণের স্ফটিক মরু অঞ্চলে বড় বড় গর্ত (যেমন—আলভোলা, ট্যাফোনি প্রভৃতি) সৃষ্টি করে। একে গহ্বরীকরণ আবহবিকার (Cavernous weathering) বলে।
(4) কলিকরণ প্রক্রিয়া :
সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে জোয়ার-ভাঁটার প্রভাবে শিলার ওপরের অংশ পর্যায়ক্রমে আর্দ্র ও শুষ্ক হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিলাস্তরের মধ্যে অসম টানের সৃষ্টি হয় ও একসময় শিলাখণ্ডগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এই পদ্ধতিকে কলিকরণ প্রক্রিয়া (Slaking) বলে।
(৬) জৈবিক প্রক্রিয়া :
বিভিন্ন জীবজন্তু, মানুষ, উদ্ভিদ প্রভৃতি যান্ত্রিক উপায়ে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
[i] শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে উদ্ভিদের শেকড় প্রবেশ করে ফাটলকে আরও প্রসারিত করে দেয়।
[ii] কেঁচো, উইপোকা, ইঁদুর, খরগোস, প্রেইরী কুকুর প্রভৃতি প্রাণী মাটিতে গর্ত করে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
[iii] মানুষও বসতি ও জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত ভূ-পৃষ্ঠের শিলার ক্ষয় করে আবহবিকারে সাহায্য করে।
[খ] রাসায়নিক আবহবিকার
11111111111
রাসায়নিক আবহবিকার কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান, যেমন কার্বন- ডাই-অক্সাইড (CO₂), অক্সিজেন (O₂), জলীয় বাষ্প প্রভৃতি এবং উদ্ভিদের প্রভাবে শিলাসমূহ যখন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ভেঙে যায় তখন তাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে। রাসায়নিক আবহবিকারে শিলার মধ্যবর্তী খনিজগুলি পরিবর্তিত হয়ে গৌণ খনিজে পরিণত হয়। এর ফলে সহজেই শিলাসমূহ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াসমূহ :-
(১) অক্সিডেশান বা জারণ (Oxidation) :
লোহাযুক্ত খনিজের সঙ্গে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে জারণ বা অক্সিডেশান বলে। এর ফলে লোহার ওপর হলদে বা বাদামী রঙের এক নতুন যৌগ পদার্থের সৃষ্টি হয় ও লোহায় সহজে মরিচা পড়ে। যেমন-
(i) লোহা + অক্সিজেন = আয়রন অক্সাইড (হেমাটাইট)
(ii) লোহা (4FeO) + অক্সিজেন(O) + জল (HO) = হাইড্রাস অক্সাইড (লিমোনাইট) (2Fe₂O₃, 3H₂O)
(২) কার্বনেশান বা অঙ্গারযোজন (Carbonation) :
বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের কার্বন- ডাই-অক্সাইডের সংযোগে শিলার আবহবিকার ঘটে। একে কার্বনেশান বা অঙ্গারযোজন বলে। বৃষ্টির জল বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে মিশে মৃদু কার্বনিক অ্যাসিডে পরিণত হয়।। এই কার্বনিক অ্যাসিড চুনাপাথর (ক্যালসিয়াম কার্বনেট)-কে দ্রবীভূত করে ক্যালসিয়াম-বাই-কার্বনেটে পরিণত করে। যেমন—
(i) জল (H₂O) + কার্বন- ডাই-অক্সাইডে (CO₂) = কার্বনিক অ্যাসিড (H₂CO₃)
(ii) চুনাপাথর ( CaCO₃) + কার্বনিক অ্যাসিড (H₂CO₃) = ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট [Ca (HCO₃)₂]
[৩] হাইড্রেশান বা জল-যোজন (Hydration) :
শিলার মধ্যবর্তী কোন খনিজের সঙ্গে বিশুদ্ধ জল যুক্ত হয়ে যে রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায়, তাকে হাইড্রেশান বা জল-যোজন বলে। এর ফলে হেমাটাইট আকরিক লোহার সঙ্গে জল যুক্ত হয়ে লিমোনাইট নামে নিকৃষ্ট লোহার সৃষ্টি হয়। যেমন- (i) CaSO₄ + H₂O ➙ CaSO₄,3H₂O
(ii) হেমাটাইট (2Fe₂O₃) + জল (3H₂O)➙ লিমোনাইট (2Fe₂O₃, 3H₂O)
[8] হাইড্রোলিসিস (Hydrolysis) :
শিলার মধ্যবর্তী খনিজ ও জলের অণুর একসঙ্গে বিয়োজন ও বিক্রিয়াকে হাইড্রোলিসিস বলে। এইরূপ আবহবিকারে জল হাইড্রোজেন আয়ন (H+) ও হাইড্রক্সিল আয়নে (OH-) ভেঙে যায় এবং খনিজের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটায়। সাধারণত ফেল্ডস্পার ও অভ্রের ওপর এই প্রক্রিয়া বিশেষভাবে কার্যকরী হয়। যেমন—
(i) অর্থক্লেজ ফেল্ডসপার (KAlSi₃O₈) + হাইড্রক্সিল (HOH) = অ্যালুমিনো সিলিসিক অ্যাসিড (HAlSi₃O₈) + পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইড (KOH)
[৫] দ্রবণ (Solution) :
সৈন্ধব লবণ, জিপসাম প্রভৃতি খনিজ জলের সংস্পর্শে এসে সম্পূর্ণ গলে যায়। এই প্রক্রিয়াকে প্রবণ বলে। এর ফলে শিলার রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তন ঘটে।
[৬] জৈবিক রাসায়নিক আবহবিকার :
উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর প্রভাবে রাসায়নিক আবহবিকারও সংঘটিত হয়। যেমন—
[i] মস্, লাইচেন, শ্যাওলা প্রভৃতি ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর দেহ পচে অ্যাসিডের সৃষ্টি হয় এবং তা শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
[ii] এলগি, মস, শ্যাওলা প্রভৃতি শিলার ওপরে জল সংরক্ষণ করে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
[iii] উদ্ভিদের ডাল, গাছের পাতা প্রভৃতি পচে জৈব অ্যাসিড হিউমাস-এর সৃষ্টি হয় ও তা শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
[iv] বিভিন্ন জীবজন্তুর বিষ্ঠা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
আবহবিকারের প্রভাব:
আবহবিকার নানাভাবে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে। যেমন—
[১] ভূমিরূপের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আবহবিকার গভীর প্রভাব বিস্তার করে।
[২] রিগোলিথ বা এক প্রকার ভূ-আস্তরণ আবহবিকারের ফলে ভেঙে যাওয়া শিলাখণ্ড দ্বারা সৃষ্টি হয়। চুনাপাথর যুক্ত অঞ্চলে এই প্রকার ভূ-আস্তরণকে টেরারোজা বলে।
[৩] আবহবিকারের ফলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্রান্তীয় অঞ্চলে বক্সাইট, ল্যাটেরাইট, ইলমেনাইট প্রভৃতি বিশেষ ধরনের শিলার সৃষ্টি হয়।
[৪] আবহবিকারের ফলে দ্রবীভূত খনিজ দ্রব্যগুলি উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগান দেয়।
[৫] আবহবিকার প্রত্যক্ষভাবে মাটি সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
[৬] শিলাস্তরে ভৌমজল সঞ্চয়ে আবহবিকার সাহায্য করে।
[৭] আবহবিকারের ফলে অদ্রবীভূত কোয়ার্টজ ও সিলিকন-ডাই-অক্সাইডগুলি অবশিষ্ট থাকে।
[৮] আবহবিকারের ফলে ক্ষয় এবং অপসারণ প্রক্রিয়া সহজ হয়।
আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শিলা চূর্ণ কে কি বলে?
উ: আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শিলা চূর্ণ কে রেগোলিথ বলে।