Type Here to Get Search Results !

স্বাভাবিক চ্যুতি (Normal Fault) / বিপরীত চ্যুতি বা বিলোম চ্যুতি (Reverse Fault) / সোপান চ্যুতি (Step Fault) এবং পরিখা চ্যুতি (Trough Fault) / সংঘট্ট চ্যুতি বা থ্রাস্ট চ্যুতি বা থ্রাস্ট (Thrust Fault or Thrust)

ক) স্বাভাবিক চ্যুতি বা আনুলোম চ্যুতি (Normal Fault)

            যে  চ্যুতিতে চ্যুতিতল বরাবর ঝুলন্ত প্রাচীর পাদমূল প্রাচীরের থেকে নিচে নেমে যায় তাকে স্বাভাবিক চ্যুতি বলে। পৃথিবীর অভিকর্ষ টানের জন্য ঝুলন্ত প্রাচীর নিচের দিকে নেমে যায়। এই কারণে এই চ্যুতিকে অভিকর্ষজ চ্যুতি (Gravity Fault) বলে।

    বৈশিষ্ট্য 

  • ঝুলন্ত প্রাচীর সর্বদা নীচে অবস্থান করে।
  •  চ্যুতিতল উলম্ব বা হেলানো দুই রকম হতে পারে। চ্যুতিতল উলম্ব হলে তাকে অনুলোম উলম্ব চ্যুতি এবং চ্যুতিতল হেলানো হলে তাকে অনুলোম তির্যক চ্যুতি বলে।
  • চ্যুতির নতির পরিমাণ চ্যুতি কোণ থেকে বেশি হয়।
  • এই ধরনের চ্যুতিতে ক্ষেপ এবং ব্যাবধির পরিমাণ কম হয়।
  • ভূপৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পায়।
  • শিলায় অনুভূমির টান এবং অভিকর্ষজ টানের প্রভাবে স্বাভাবিক চ্যুতির সৃষ্টি হয়।
  • ভূমিরূপ হিসেবে চ্যুতি ভৃগুর সৃষ্টি হয়।


খ) বিপরীত চ্যুতি বা বিলোম চ্যুতি (Reverse Fault)

                  সংনমন বল বা সংকোচন বল খুব বেশি হলে চ্যুতিতল বরাবর ঝুলন্ত প্রাচীর পাদমূল প্রাচীরের উপরে উঠে যায়। এর ফলে যে চ্যুতি গঠিত হয় তাকে বিলোম চ্যুতি বা বিপরীত চ্যুতি বলে।

                ঝুলন্ত প্রাচীরে যে ভৃগু গঠিত হয় তার সম্পূর্ণ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। কালক্রমে ঝুলন্ত অংশ ধ্বসে গিয়ে অথবা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অপসারিত হয় এবং খাড়া ভৃগু  গঠন করে। যেমন- পাঁচমারি পর্বতের জটাশঙ্কর।


    বৈশিষ্ট্য

  • সংকোচন বল বা সংনমন বলের প্রভাব বেশি।
  • চ্যুতিতলের নতির পরিমাণ চ্যুতি কোণের থেকে কম হয়।
  • পাদমূল প্রাচীর থেকে ঝুলন্ত প্রাচীর উপরে অবস্থান করে।
  • ভূ-পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল কমে যায়।
  • ক্ষেপ এবং ব্যাবধির পরিমাণ বেশি হয়।
  • ঝুলন্ত ভৃগু বা Over hanging Cliff গঠিত হয়।


গ) সোপান চ্যুতি (Step Fault) এবং পরিখা চ্যুতি (Trough Fault)

               যদি কোন অঞ্চলে অনেকগুলি স্বাভাবিক চ্যুতি সমান্তরালভাবে একই দিকে গঠিত হয় তখন তা দেখতে সিঁড়ির ধাপের মতো মনে হয়। এইভাবে গঠিত চ্যুতিকে সোপান চ্যুতি বলে।

       উদাহরণ 

            রাইন নদীর গ্রস্ত উপত্যকা, অ্যাপালেশিয়ান পর্বতের পূর্বদিকে দেখা যায়।

   পরিখা চ্যুতি

           দুদিক থেকে স্বাভাবিক চ্যুতি নেমে এসে একত্রে মিলিত হলে সরু পরিখা গঠন করে একে পরিখা চ্যুতি বলে।

    বৈশিষ্ট্য 

  • প্রচন্ড টানজনিত বা প্রসারণ জনিত বলের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। 
  • অনেকগুলি স্বাভাবিক চ্যুতি পরপর অবস্থান করে। 
  • চ্যুতিরেখা অথবা চ্যুতি তলগুলি প্রায় পরস্পরের সমান্তরাল হয়। 
  • এই চ্যুতিতে সিঁড়ির মত ধাপ সৃষ্টি হয়।


ঘ) সংঘট্ট চ্যুতি বা থ্রাস্ট চ্যুতি বা থ্রাস্ট (Thrust Fault or Thrust)

       বিলোম চ্যুতি বা বিপরীত চ্যুতিতে চ্যুতিতলের নতি 45° র কম হলে তাকে থ্রাস্ট চ্যুতি বা সংঘট্ট চ্যুতি বা থ্রাস্ট বলে।

  উৎপত্তির কারণ 

  • ভূ-আলোড়ন খুব তীব্র এবং ঘনঘন হলে চ্যুতিতল অনেক বেশি হেলে গিয়ে থ্রাস্ট গঠন করে। 
  • ভঙ্গিল পর্বতে শায়িত ভাঁজে বেশি পরিমাণ চাপ পড়লে থ্রাস্ট চ্যুতি গঠিত হয়।  

বৈশিষ্ট্য 

  • চ্যুতি তলের নতি 0° থেকে 45° হয়।
  • এই চ্যুতি বিলোম চ্যুতি বা বিপরীত চ্যুতির প্রকারভেদ। 
  • সংনমন বলের প্রভাবে এই চ্যুতির সৃষ্টি হয়। 
  • এই চ্যুতিতে ঝুলন্ত প্রাচীর অনেকটা দূরে স্থানান্তরিত হয় অথবা পাদমূল প্রাচীর ভেতরের দিকে প্রবেশ করে।


প্রকারভেদ: থ্রাস্ট চ্যুতি দুই ধরনের হয়। যথা- 

    অধিরোপণ বা আবৃত চ্যুতি (Over Thrust)

              যে সকল থ্রাস্ট চ্যুতির ক্ষেত্রে চ্যুতিতলের নতি 10° অথবা তার থেকে কম হয় এবং ঝুলন্ত প্রাচীর চ্যুতিতল বরাবর পাদমূল প্রাচীরের ওপর দিয়ে অনেক দূরে স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে অধিরোপন চ্যুতি বলে।

    অবরোপণ চ্যুতি (Under Thrust) 

             যে সকল থ্রাস্ট চ্যুতির ক্ষেত্রে চ্যুতিতলের নতি 10° র কম থাকে এবং চ্যুতিতল বরাবর পাদমূল প্রাচীর বা অধোস্তূপ ভূ-ত্বকের আরো গভীরে প্রবেশ করে, তাকে অবরোপণ চ্যুতি বলে।




আরও পড়ুন






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area