Type Here to Get Search Results !

প্রবাল প্রাচীর কি? প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর, প্রতিবন্ধক প্রবালপ্রাচীর এবং অ্যাটল ।

             ক্রান্তীয় অঞ্চলে অগভীর সমুদ্রের তলদেশে সবুজ, সাদা, হলুদ ইত্যাদি নানা রঙের প্রবাল কীটের দেহ সঞ্চিত হয়। এদের দেহ চুনজাতীয় পদার্থ দ্বারা গঠিত। এই পদার্থ সঞ্চিত হয়ে চুনাপাথর সৃষ্টি করে। চুনাপাথর সঞ্চয় দীর্ঘাকৃতি বা বলয়ের আকৃতির হলে তাকে প্রবাল প্রাচীর বলে। উৎপত্তির পর্যায় ও প্রকৃতি অনুযায়ী প্রবাল প্রাচীরকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়্‌। যথা --      



ক) প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর  

           সমুদ্রউপকূল বা দীপের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় সংকীর্ণ ও বলয়ের আকারে যে প্রবাল প্রাচীর গড়ে ওঠে তাকে প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর বলে। এটি যেকোন প্রবাল প্রাচীর গঠনের প্রাথমিক পর্যায়কে নির্দেশ করে। 

       বৈশিষ্ট্য 

           ১. এই ধরনের প্রবাল প্রাচীর উপকূলের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। 

          ২.  এগুলির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ কম অর্থাৎ আয়তনে ছোট হয়।

          ৩.  সমুদ্রের দিকের অংশটি অপেক্ষাকৃত উঁচু হয়।

          ৪.  এর উপরিভাগ সমতল হয় এবং ভাঁজ যুক্ত হয়। 

          ৫. অনেক সময় প্রধান ভূখণ্ড ও প্রান্তদেশীয় রিফের মধ্যবর্তী অংশে সংকীর্ণ উপহ্রদ বা লেগুন থাকে। একে বোট চ্যানেল (Boat channel) বলে।


        উদাহরণ  

             ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং লাক্ষাদ্বীপের চারপাশে প্রান্তদেশীয় প্রবালপ্রাচীর দেখা যায়।


খ) প্রতিবন্ধক প্রবালপ্রাচীর (Barrier Reef) 

             সমুদ্রউপকূল বা দ্বীপ থেকে কিছুটা দূরে কয়েকশো মিটার থেকে 5 কিলোমিটার বিস্তৃত উপকূলের সমান্তরালে গড়ে ওঠা প্রবাল প্রাচীরকে প্রতিবন্ধক প্রবাল প্রাচীর বেরিয়ার রিফ (Barrier Reef) বলে। নৌচলাচলে বাধা সৃষ্টি করে বলে একে প্রতিবন্ধক প্রবালপ্রাচীর বলে। 


          বৈশিষ্ট্য 

             ১. মূল ভূখণ্ড থেকে গভীর ও বিস্তৃত জলভাগ দ্বারা বিচ্ছিন্ন থাকে। 

              ২. এর গড় ঢাল 45° হলেও কিছু কিছু প্রবালপ্রাচীরের ঢল 15° থেকে 25°।  

             ৩. এগুলির আয়তন বৃহৎ, অধিক বিস্তার এবং প্রশস্ত যুক্ত হয়। 

             ৪. উপকূল এবং প্রাচীরের মধ্যে অগভীর এবং প্রশস্ত লেগুন বা উপহ্রদ থাকে।

             ৫. এইগুলি একটানা ভাবে বিস্তৃত না হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়।

             ৬.  বিচ্ছিন্ন অংশের মধ্য দিয়ে জোয়ারের জল প্রবেশ করে। 


        উদাহরণ  

           অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর।


গ) অ্যাটল( Atoll)

          সমুদ্রের মধ্যে মোটামুটি বলয়ের আকারে যেসকল খাড়া ঢাল বিশিষ্ট প্রবাল প্রাচীর গঠিত হয় তাদের অ্যাটল বা প্রবাল বলয় বলে।

         উৎপত্তি  

            সমুদ্রের মধ্যে আগ্নেয়গিরির চারপাশে প্রতিবন্ধক প্রবাল প্রাচীর গঠিত হবার পর আগ্নেয়গিরি নিমজ্জিত হলে নিমজ্জনের সঙ্গে তাল রেখে প্রবাল প্রাচীর উপরের দিকে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আগ্নেয়গিরি সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হলেও প্রবাল প্রাচীরের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। ফলে সমুদ্র জলতলের ওপর প্রবাল প্রাচীর বলয়ের আকারে অবস্থান করে।

        বৈশিষ্ট্য  

           ১. এদের আকৃতি বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার।

           ২. অ্যাটলর মধ্যবর্তী অংশে অগভীর উপহ্রদ থাকে। যার গভীরতা 30 থেকে 50 মিটার। 

           ৩. অ্যাটলের বহির্মুখী দেওয়াল অত্যন্ত ঢালু হয়। 

            ৪. অ্যাটলে অনেক সংযোগকারী পরিখা থাকে।

           ৫. সমুদ্রগর্ভের কোন মালভূমি, পাহাড় বা গায়ের ওপর অ্যাটল গঠিত হয়।


      উদাহরণ 

         পূর্ব ফিজি অ্যাটল, এলিশ দ্বীপের ফুনাফুটি অ্যাটল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area