বিভিন্ন কারণে স্ট্রাটোস্ফিয়ারের ওজোন স্তরের দ্রুত বিনাশ ঘটছে। মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়া-কলাপ এর মধ্যে অন্যতম। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো -
ক) CFC নির্গমন
CFC বা ক্লোরোফ্লুরোকার্বন হলো ক্লোরিন, ফ্লুওরিন এবং কার্বনের একটি যৌগ। এটি একটি স্থায়ী যৌগ যা বায়ুমন্ডলে প্রায় 100 বছরের বেশি সময় ধরে অবস্থান করে। CFC ভেঙে যে ক্লোরিন পরমাণু নির্গত হয় তা ব্যাপক হারে ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে। রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, স্প্রে-কেন, বিমানের প্রপেলার, ফর্ম অফ প্লাস্টিক প্রভৃতি থেকে CFC গ্যাস নির্গত হয়। CFC ক্লোরিন অনুকে ভেঙে ক্লোরিন পরমানুতে পরিনত করে। ক্লোরিন পরমাণু ওজোন অণুকে ভেঙে একটি হাইপোক্লোরাইট পরমাণু (ClO) এবং একটি অক্সিজেন অণুতে (O2) পরিণত করে। একটি ক্লোরিন পরমাণু কয়েক লক্ষ ওজোন আনুকে ধ্বংস করতে পারে।
2 Cl2 ----> 2 Cl + Cl
Cl + O3 -----> ClO + O2
খ) হ্যালন গ্যাস নির্গমন
আগুন নেভানোর জন্য হ্যালন গ্যাস ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। এই গ্যাসে ব্রোমিন সমন্বিত বিভিন্ন যৌগ থাকে, যেমন- হ্যালোন -1211, হ্যালন-1301 প্রভৃতি। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে হ্যালোন ভেঙে ব্রোমিন পরমাণু নির্গত হয় যা ওজন অনুকে ভেঙে দেয়। ব্রোমিনের ওজন ক্ষয়কারি ক্ষমতা ক্লোরিনের থেকে অনেক বেশি।
গ) মিথাইল ক্লোরোফরম এবং কার্বন টেট্রাক্লোরাইড নির্গমন
এই দুটি যৌগিক পদার্থ গ্যাস রূপে নির্গত হয়। দ্রাবক হিসেবে ব্যবহৃত এই দুটি যৌগের স্পর্শে এসে ওজন অনু ভেঙে যায় ফলে ওজোন স্তর ক্ষয় প্রাপ্ত হয়।
ঘ) সালফেট যৌগ নির্গমন
কল কারখানার চিমনী থেকে নির্গত সালফার-ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলের উপাদান এবং সূর্য রশ্মির প্রভাবে নানা ধরনের সালফেট যৌগ তৈরি করে। যেগুলির সংস্পর্শে ওজন অণুর ভেঙে অক্সিজেন অনু ও পরমাণুতে পরিণত হয়।
ঙ) নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন
স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলা সুপারসনিক বিমান থেকে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইডের সংস্পর্শে এসে ওজোন গ্যাসের বিনাশ ঘটে।
NO + O 3 ----> NO2 + O2
NO2 + O ----> NO + O2