উত্তর ভারতে অবস্থিত পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজ্য কৃষিতে উন্নত হওয়ার কারণ নিম্নে আলোচনা করা হল,--
ক) প্রাকৃতিক কারণ
1. জলবায়ুঃ
পাঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্যের তাপমাত্রা 15° সেলসিয়াস থেকে 25° সেলসিয়াস এবং বৃষ্টিপাত 60 - 100 সেন্টিমিটার যা গম, কার্পাস, ধান চাষের পক্ষে আদর্শ। এখানে গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এবং শীতকালে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য বৃষ্টিপাত হয়।
2. উর্বর মৃত্তিকাঃ
গঙ্গা ও সিন্ধু নদীর বিভিন্ন উপনদী দ্বারা বাহিত পলি গঠিত দোয়াব অঞ্চলগুলি খুব উর্বর। নদীর পলি গঠিত উর্বর দোআঁশ মৃত্তিকা কৃষিজ ফসল উৎপাদনে আদর্শ।
3. সমতল ভূপ্রকৃতিঃ
পাঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্য সিন্ধু ও গঙ্গা সমভূমির অন্তর্গত। সমতল ভূ-প্রকৃতি হওয়ার জন্য কৃষিক্ষেত্রে জলসেচ ও কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে কোন রকম অসুবিধা হয়না।
খ) অর্থনৈতিক কারণ
4. জলসেচঃ
পাঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্যের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব বেশি না হওয়ায় জলসেচের প্রয়োজন হয়। গঙ্গা, সিন্ধু নদীর বিভিন্ন উপনদী থেকে খাল কেটে কৃষিজমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য খালগুলি হল উচ্চ বারী দোয়াব খাল, পশ্চিম যমুনা খাল, সিরহিন্দ খাল প্রকৃতি।
5. সবুজ বিপ্লবঃ
1960 দশকে পাঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্যের কৃষকদের উন্নত ধরনের বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার ফলে কৃষি উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। যা সবুজ বিপ্লব নামে পরিচিত। সেই ধারাবাহিকতা এখনো চলছে।
6. কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারঃ
পাঞ্জাব-হরিয়ানা রাজ্যে কৃষিসংক্রান্ত প্রায় সমস্ত কাজ যন্ত্রের মাধ্যমে করা হয়। এতে সময় এবং অর্থের অপচয় কম হয়।
7. নিবিড় কৃষিকাজঃ
কৃষিজমির তুলনায় মোট জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় নিবিড় পদ্ধতিতে এখানে কৃষি কাজ করা হয়। ফলে ফসল উৎপাদন অন্যান্য রাজ্য থেকে বেশি হয়।
8. আর্থিক সহায়তাঃ
দ্বিতীয় ও তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ভারত সরকার কৃষিক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে। মূলত এই অঞ্চলে এই অর্থের বিনিয়োগের ফলে অঞ্চলের কৃষির সামগ্রিক উন্নতি ঘটেছে।