ল্যাপিস বা কারেন কি?
চুনাপাথর গঠিত অঞ্চল অধিক ঢালযুক্ত (60°-80°) হলে বৃষ্টির জল ঢাল বরাবর প্রবাহিত হওয়ার সময় দ্রবন কার্যের ফলে সরলরেখার ন্যায় খাতের সৃষ্টি করে। তাকে ফরাসি ভাষায় ল্যাপিস, জার্মান ভাষায় কারেন্ ও ইংল্যান্ডে গ্রাইক বলে।
বৈশিষ্ট্যঃ
১. খাতগুলি কুড়ি মিটার দীর্ঘ, 1 মিটার গভীর এবং 0.6 মিটার প্রস্থ যুক্ত হয়।
২. খাতগুলি পরস্পর সমান্তরাল ভাবে বিস্তৃত থাকে।
৩. খাতগুলির মধ্যভাগ তীক্ষ্ণ উচ্চভূমি রূপে অবস্থান করে।
৪. কারেন যুক্ত অঞ্চল বন্ধুর প্রকৃতির হয়।
শ্রেণীবিভাগঃ
কারেন কয়েক ধরনের হয়। যেমন-
১. রিলেন কারেন (Rellenkarren)
পরস্পরের কাছাকাছি ক্ষুদ্র এবং সংকীর্ণ খাতগুলিকে রিলেন কারেন বলে।
২. রিনেন কারেন ( Rinnenkarren)
রিলেন কারেনের চেয়ে বড় খাতগুলিকে রিনেন কারেন বলে। রিলেন কারেনগুলি পরবর্তীতে দ্রবন জনিত ক্ষয় কার্যের ফলে প্রসারিত হলে অথবা একাধিক রিলেন কারেন পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রিনেন কারেন গঠন করে।
৩. ট্রিট কারেন ( Trittkarren)
বৈষম্যমূলক ক্ষয়কার্যের ফলে রিনেন কারেনের মাঝখানে কয়েকটি ধাপের সৃষ্টি হয়। এই অংশে সমতল তলদেশ বিশিষ্ট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গর্তের সৃষ্টি হয়। এদের ট্রিট কারেন বলে।
৪. রুন্ড কারেন ( Rundkarren)
খাঁজগুলির তলদেশ এবং খাঁজগুলির মধ্যবর্তী ভূমির শীর্ষদেশ গোলাকার আকৃতির হলে তাকে রুন্ড কারেন বলে। অথবা বলা যায় গোলাকার শিলাখণ্ড দ্বারা গঠিত কারেন রুন্ড কারেন নামে পরিচিত।
৫. ক্লুফট কারেন ( Kluftkarren) বা গ্রাইকঃ
চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে দারণ বা সন্ধিস্থল বরাবর দ্রবন কার্যের ফলে যে দীর্ঘ এবং গভীর গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে ক্লুফট কারেন বা গ্রাইক বলে। গ্রাইকগুলি বৃহৎ আকৃতির হলে তাকে বোগাজ (Bogaz) বা করিডোর (Corridors) বলে।
৬. ফ্লাক কারেন ( Flackkarren) বা ক্লিন্ট ( Clints)
দুটি গ্রাইকের মধ্যবর্তী উচ্চভূমিকে কারেন বা ক্লিন্ট বলে।
উদাহরণঃ
বোরাগুহালু রেলস্টেশনের উত্তর-পূর্ব দিকে ল্যাপিস বা কারেন দেখা যায়।