Type Here to Get Search Results !

ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ/ শ্রেণীবিভাগ/ অবস্থান/ বৈশিষ্ট্য

                                      

ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভূমি (Tropical Evergreen Forest)

         জলবায়ুঃ  

               তাপমাত্রা 25° থেকে 27° সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাত 200 সেন্টিমিটার এবং আর্দ্রতা 75%।

         প্রধান বৃক্ষঃ 

               চাপ্লাস, গর্জন, রাবার, রোজউড, আয়রন উড, লোহাকাঠ, শিশু প্রভৃতি।

         অবস্থানঃ 

               পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমাংশ, মেঘালয় মালভূমি, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ।

         বৈশিষ্ট্যঃ  

             ১. গাছের পাতা সবুজ থাকে বলে একে চিরহরিৎ অরণ্য বলে।

             ২.  বিভিন্ন প্রজাতির গাছ একত্রে অবস্থান করে।

             ৩. গাছগুলো উচ্চতায় 40 থেকে 50 মিটার লম্বা হয়। 

             ৪. আসবাবপত্র এবং ঘরবাড়ি তৈরিতে এই উদ্ভিদ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।


আদ্র পর্ণমোচী অরণ্য (Wet Deciduous Forest)

           জলবায়ুঃ 

                বার্ষিক বৃষ্টিপাত 100 থেকে 150 সেন্টিমিটার। উষ্ণতা 26° থেকে 27°সেলসিয়াস।আর্দ্রতা  60 থেকে 70 শতাংশ।

           অবস্থানঃ 

                হিমালয়ের পাদদেশে তরাই ও ডুয়ার্স, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, প্রভৃতি।       

            প্রধান উদ্ভিদঃ

                 শাল, সেগুন, শিরীষ, পলাশ, মহুয়া, চন্দন, অর্জুন, শিমুল প্রভৃতি । 

            বৈশিষ্ট্যঃ 

                ১. শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়।

                ২.  বর্ষবলয় স্পষ্ট ভাবে লক্ষ্য করা যায়।

                ৩. ভারতের অধিকাংশ বনভূমি আদ্র পর্ণমোচী প্রকৃতি।

শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য ( Dry Deciduous forest )

             জলবায়ুঃ 

                  বার্ষিক বৃষ্টিপাত 50 থেকে 100 সেন্টিমিটার। গড় উষ্ণতা 25° সেন্টিগ্রেড। আর্দ্রতা 60% এর কম হয়। 

             অবস্থানঃ 

                  মহারাষ্ট্র, গুজরাট, ছত্রিশগড়, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা প্রভৃতি ।

              প্রধান উদ্ভিদঃ 

                  বাবলা, খেজুর, কুল, পলাশ, ঘাস।

              বৈশিষ্ট্যঃ

                 ১. শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়।

                 ২.  উচ্চতা বেশি হয় না এবং তৃণভূমির প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়।

                 ৩.  ঘাসের প্রাধান্য থাকায় এই অঞ্চলকে ভারতের সাভানা বলে। এখানে প্রাপ্ত সাবাই ঘাস থেকে কাগজ তৈরি হয়।


ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদ (Desert Plant)

               জলবায়ুঃ

                   গড় উষ্ণতা 35° থেকে 45° সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাত 50 সেন্টিমিটারের কম।

               অবস্থানঃ 

                   রাজস্থান, কচ্ছ, কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ, দাক্ষিণাত্য মালভূমির বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল। 

               প্রধান উদ্ভিদঃ 

                   বাবলা, খেজুর, ফনিমনসা, জুলিফ্লোরা প্রভৃতি। 

               বৈশিষ্ট্যঃ

                  ১.  কাটা জাতীয় উদ্ভিদ লক্ষ্য করা যায়।

                  ২. এই অঞ্চলের উদ্ভিদকে জেরোফাইট বলে। 

                  ৩. পাতাগুলি কাটায় রূপান্তরিত হয়। 

                  ৪. জ্বালানির কাজে এই ধরনের উদ্ভিদ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।


পার্বত্য অঞ্চলের বনভূমি (Himalayan Forest)

               জলবায়ুঃ 

                     বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 75 থেকে 125 সেন্টিমিটার। গড় উচ্চতা 10° থেকে 20° সেলসিয়াস। 

              অবস্থানঃ

                    জম্মু-কাশ্মীর থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে এই উদ্ভিদ দেখা যায়। 

              প্রধান উদ্ভিদঃ

                  ১.  হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে 1000 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত চিরসবুজ বনভূমি। যেমন- গর্জন, আবলুস উদ্ভিদ জন্মায়।

                  ২. 1000 থেকে 2000 মিটার উচ্চতায় পর্ণমোচী বনভূমি। প্রধান উদ্ভিদ- ওক, চেস্টনাট, বিচ, অ্যাশ।

                  ৩.  2000 থেকে 4000 মিটার উচ্চতায় সরলবর্গীয় বনভূমি।প্রধান উদ্ভিদ- পাইন,ফার, স্প্রুশ, বার্চ, সিডার। 

                  ৪. 4000 মিটারের অধিক উচ্চতায় আল্পীয় বনভূমি। প্রধান উদ্ভিদ- জুনিপার, রডোডেনড্রন।


ম্যানগ্রোভ বনভূমি ( Mangrove forest) 

               অবস্থানঃ

                  গঙ্গা, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে। 

               প্রধান উদ্ভিদঃ

                 সুন্দরী, গরান, গেওয়া, গোলপাতা, কেওড়া, হেতাল, হোগলা প্রভৃতি । 

               বৈশিষ্ট্যঃ 

                  ১. জোয়ার ভাটার প্রভাবে সামুদ্রিক নোনাজল প্রবেশ করায় উদ্ভিদ গুলির শ্বাসমূল এবং ঠেস মূল দেখা যায়।                    ২. উদ্ভিদগুলো চিরহরিৎ প্রকৃতির। 

                 ৩. গোলপাতা এবং হোগলা ঘর ছাউনিতে কাজে লাগে। 

                 ৪. গঙ্গার বদ্বীপ অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বনভূমিতে সুন্দরী গাছের প্রাধান্য থাকায় এই বনভুমিকে সুন্দরবন বলে। সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্যতামিলনাড়ুর পিছাভারাম পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। 

                 ৫. এখানকার উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায়। সুন্দরী গাছে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায় না।

                 ৬.  ভারতের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের আয়তন 4740 বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সর্বাধিক 2106 বর্গ কিলোমিটার।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

       1. ভারতের বনভূমির আয়তন মাত্র 21.54 %। 

       2. পশ্চিমবঙ্গে এই বনভূমির আয়তন মাত্র 14.2 %।

       3. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কোন অঞ্চলের 33 শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। 

       4.ভারতের বনভূমি গবেষণা ও Forest Survey of India রয়েছে উত্তরাখণ্ডে দেরাদুন।

       5. হিমালয় বনভূমি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে হিমাচল প্রদেশের সিমলা।

       6. মোট বনভূমির পরিমাণে মধ্যপ্রদেশ ভারতের প্রথম ।

       7. শতকরা বনভূমিতে মিজোরাম ভারতের প্রথম রাজ্য। মোট জমির 88.93 শতাংশ।

       8. কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে সর্বাধিক বনভূমি রয়েছে আন্দামান 87% ।

       9.ভারতের যে রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ সবচেয়ে কম- হরিয়ানা। 3.64 শতাংশ।

    

      10. ভারতের সংগৃহীত মোট কাঠের 63% জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

      11.বনভূমিকে সবুজ সোনা বলে।

      12. 1952 সালে জাতীয় বন নীতি গ্রহণ করা হয়।

      13. 1980 সালে বন সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করা হয়।

      14. পশ্চিমবঙ্গে আদ্র পর্ণমোচী মৌসুমী বনভূমি দেখা যায়।

      15. লাক্ষাদ্বীপে কোন বন নেই।

      16. মাথাপিছু বনভূমি সবচেয়ে বেশি অরুণাচল প্রদেশ।

      17. বিশ্ব অরণ্য দিবস 21 মার্চ।

      18. ভারতে মোট বনভূমির পরিমাণ 701673 বর্গ কিলোমিটার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area