বৃষ্টির ফোঁটা বা জলপ্রবাহ প্রভৃতির দ্বারা মৃত্তিকার উপরের পদার্থ আলগা হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ধরনের ক্ষয় কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে-
পত্রক্ষয় (Sheet Erosion)
সমানভাবে ঢালু কোন ভূমির উপর দিয়ে প্রবাহমান জলের দ্বারা মৃত্তিকার উপরের সূক্ষ্মস্তর সমানভাবে অপসারিত হলে তাকে পত্রক্ষয় বা চাদর ক্ষয় বা Sheet Erosion বলে।
এই ধরনের ক্ষয় এতই ধীরগতিতে হয় যে খালি চোখে বোঝা যায় না। সিন্ধু এবং গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে এই ধরনের মৃত্তিকা ক্ষয় দেখা যায়।
নালীক্ষয় (Rill Erosion)
যখন ঢালু ভূভাগের সমগ্র স্থান থেকে মৃত্তিকা সমানভাবে অপসারিত না হয়ে জল ধারা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম প্রবাহপথ এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই প্রকার মৃত্তিকা ক্ষয়কে জলনালিকা ক্ষয় বা নালীক্ষয় বা Rill Erosion বলে।
প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে এই ধরনের ক্ষয় হয়ে থাকে।
খাতক্ষয় (Gully Erosion)
ঢাল অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় বৃষ্টির জলধারা যদি সম্মিলিত হয়ে প্রবাহিত হয় তখন নালীকা সমূহ বেশ কিছুটা গভীর এবং স্পষ্ট হয়ে যায়। এইরকম অপেক্ষাকৃত গভীর এবং স্পষ্ট নালীগুলিকে খাত বলে। যে ধরণের ক্ষয়ের ফলে এগুলি সৃষ্টি হয় তাকে খাতক্ষয় বা Gully Erosion বলে। নালীগুলি ক্রমশ বিস্তৃত হয়ে খাতক্ষয় বা Gully Erosion ঘটায়।
শান্তিনিকেতনের খোয়াই অঞ্চল, মধ্যপ্রদেশের চম্বল উপত্যকায় এই ধরনের ক্ষয় লক্ষ্ করা যায়।
রাভাইন(Ravine)
অপেক্ষাকৃত অধিক ঢালু ভূমিতে যদি বিশেষ কোনো উদ্ভিদ না থাকে তবে জলের ধারার ক্ষয় মারাত্মক আকার ধারণ করে । এর ফলে খাতগুলি আরো গভীর হয়ে পড়ে। যাদের পার্শ্বদেশ বা পাড় খুব খাড়া হয়। এইরূপ খাড়া পাড় যুক্ত ভূমিকে রাভাইন(Ravine) বলে।
মেদিনীপুরের গরবেতা অঞ্চলের গণগণিতে এইরূপ রাভাইন সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যাডল্যান্ড(Badland Topography)
কোন বিস্তৃত অঞ্চলে প্রায় বৃক্ষহীন অথবা বৃক্ষহীন যুক্ত স্থানে ব্যাপক আকারে নালীক্ষয় এবং রাভাইন সৃষ্টি হলে যে ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে ব্যাডল্যান্ড (Badland Topography) ভূমিরূপ বলে। এই ধরনের ভূমি অনুর্বর হয় এবং কৃষিকার্যে সম্পূর্ণরূপে অনুপযুক্ত হয়।
Forthanks
উত্তরমুছুন