আমরা জানি পৃথিবীতে প্রাপ্ত মোট জলের প্রায় 3 শতাংশ স্বাদু জল বা মিষ্টি জল। মোট স্বাদু জলের মাত্র 0.1% রয়েছে নদী-নালা, খাল-বিল এবং মৃত্তিকায় জলীয়বাষ্প হিসাবে।
নদী থেকে খাল খনন করা হয়েছে |
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সেচদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এই রাজ্যের ভূপৃষ্ঠস্থ জল তথা নদী, খাল ও জলাশয়ে সঞ্চিত মোট জলের পরিমাণ 13.30 মিলিয়ন হেক্টর মিটার(Mham)। কৃষিকাজ, শিল্পোত্পাদন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কাজে এই জল সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এই জলের চাহিদা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তর এর তথ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত ভূ-পৃষ্ঠস্থ জল ব্যবহার করার ফলে 2025 সালের মাধ্যে এই জলের বিপুল ঘাটতি দেখা দেবে।
ভূপৃষ্ঠস্থ জল তথা নদী বা খালের জলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব গুলি হল-
1. ভৌম জলের ভাণ্ডার হ্রাস:
নদী বা খালের থেকে অতিরিক্ত জল ব্যবহার করলে মৃত্তিকার অভ্যন্তরে কম পরিমাণ জল চুইয়ে প্রবেশ করে ফলে ভৌম জল তলের অবনমন ঘটে।
2. মৃত্তিকার লবনতা বৃদ্ধি:
কৃষি ক্ষেত্রে জলসেচ করার জন্য নদী, খাল প্রভৃতি থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জল সংগ্রহ করা হয়। অতিরিক্ত জল সেচের কারণে কৃষি জমির লবনতা বৃদ্ধি পায়। পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজ্যে এই কারণে জমির লবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
3. জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব:
অতিরিক্ত ভূপৃষ্ঠস্থ জল ব্যবহারের ফলে জলের পরিমাণ দ্রুতহারে হ্রাস পাবে। ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হবে। এছাড়া মৎস্য সম্পদের যোগান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পাবে।
4. ফসল উৎপাদনের উপর প্রভাবঃ
নদী বা খালের জল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় কৃষিক্ষেত্রে। মাত্রাতিরিক্ত জল ব্যবহারের ফলে অদূর ভবিষ্যতে জলসেচের অভাবজনিত কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। ফলে খাদ্যাভাবের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে ।
5. পানীয় জলের ঘাটতিঃ
ভৌম জলের সীমিত ভান্ডার হওয়ার জন্য নদী তীরবর্তী শহর গুলোতে নদীর জলকে পরিশ্রুত করে পানীয় জলের যোগান দেওয়া হয়। মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে নদী তীরবর্তী শহর গুলোতে পানীয় জলের ঘাটতি দেখা দেবে।
6. জল দূষণঃ
নদী বা খালের জলের পরিমাণ কমে গেলে পরোক্ষভাবে জল দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
জল দূষণ |